তীর্থঙ্কর মুখার্জী :ভ্রমণ-পিপাসু মানুষ সুযোগ পেলেই বেড়িয়ে পড়ে ভ্রমণে।প্রকৃতির সৌন্দর্যের টানে কখনো ছুটে যায় পাহাড়ি এলাকায়, কখনো বা সমুদ্র সৈকতে। জঙ্গলের মোহময়ী রূপে সে যেমন মুগ্ধ হয় তেমনি কারুকার্যময় মন্দির-মসজিদের রূপ তাকে টানে।বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য সৌন্দর্য। কিন্ত ভ্রমণপিপাসুদের জন্য থাকে না পর্যাপ্ত সুবিধা।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা ব্যানার্জ্জী বুঝতে পারেন পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হতে পারে প্রচুর কর্মসংস্হান। শুধু দরকার উপযুক্ত পরিকাঠামো। সেটা গড়ে তোলার জন্য রাজ্যের পর্যটন দপ্তর খুবই সক্রিয়।
রাজ্যের অন্যতম জেলা বাঁকুড়া। এখানেই আছে মন্দিরের শহর বিষ্ণুপুর। মন্দিরের টেরাকোটার কাজ মুগ্ধ করে ভ্রমণ পিপাসুদের। এই জেলাতেই আছে পাহাড়, শাল-সেগুনের সুন্দরী অরণ্য। কিন্তু নাই রাত্রিবাসের জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো। এবার সেই সমস্যা দূর করতে এগিয়ে এল বিষ্ণুপুর মহকুমা ও জয়পুর ব্লক প্রশাসন। সিনেমার পর্দায় দেখা 'গাছবাড়ি' নিয়ে হাজির হলো জয়পুর ব্লকের সমুদ্রবাঁধের ধারে অবস্হিত 'সুরধ্বনি' পার্ক।
মহাকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে - জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির পরিচালনায় এবং স্হানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার বিধায়ক তহবিল থেকে পাওয়া ৩০ লক্ষ টাকায় এই 'গাছবাড়ি' গড়ে উঠছে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যুক্ত প্রত্যেক বাড়িতে থাকছে একটি করে ঘর। সেখানে চারজন করে আরামে থাকতে পারবে।এছাড়া একই সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠছে আরও দুটি 'কটেজ'। খাদ্য রসিকদের জন্য স্হানীয় খাদ্য নিয়ে হাজির 'ফুড কোর্ট'। 'রেন ড্যান্স', সুইমিং পুল, সমুদ্রবাঁধে নৌকাবিহারের সুযোগ যেমন আছে তেমনি দু'পাশে শাল-সেগুন-পলাশ অরণ্যের মধ্যে দিয়ে চলে যাওয়া লাল-মোরাম পথ ধরে পর্যটকরা সহজেই চলে যেতে পারবে নিকটবর্তী গ্রামে। যাওয়ার পথে বড় গাছে গড়ে ওঠা মাচায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়াও যাবে। ঘুরে আসতে পারবেন অদূরেই অবস্থিত সারদা মায়ের জন্মভিটে " জয়রাম বাটি" ও ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের জন্মভিটে কামারপুকুর।পর্যটকরা গোকুলনগরের গোকুলচাঁদ মন্দির সহ বাঁকুড়ার নানা ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্হান যাতে ঘুরে দেখতে পারে তার জন্য 'পর্যটন সার্কিট' গড়ে তোলা হবে।পর্যটকদের নিরাপত্তার দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে।
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক মানস মণ্ডল জানান - পর্যটকরা খুব তাড়াতাড়ি 'গাছবাড়ি' ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।বিষ্ণুপুরে ট্যুরিজমের বা জয়পুর ব্লকের ওয়েবসাইট থেকে 'গাছবাড়ি' 'বুক' করার সুযোগ পাওয়া যাবে ।তিনি আরও বললেন গাছবাড়ি, কটেজ, ফুড পার্ক সবই পিপি মডেলে পরিচালনা করা হবে।
অন্যদিকে স্হানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা বললেন - তাদের লক্ষ্য হলো দেশের পর্যটন মানচিত্রে বাঁকুড়া কে তুলে আনা। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্ররেণায় জেলার ঐতিহ্য কেন্দ্রগুলি সাজিয়ে তোলা হয়েছে। উন্নত হয়েছে রাস্তা তথা পরিবহণ ব্যবস্হা। চেষ্টা চলছে পর্যটকদের জন্য থাকার ব্যবস্হা করা।রাজ্য থেকে যারা নিয়মিত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বেড়াতে যান বাঁকুড়া প্রশাসনের উদ্যোগ দেখে খুব খুশি। তাদের আশা 'শর্ট ট্রিপ' হিসেবে অচিরেই বাঁকুড়া পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। থাকবে তাঁবুতে রাত কাটানোর সুযোগও।
Comments
Add comment